, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪ , ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ


বিশ্বের দীর্ঘতম ৩২৭ ফুট লম্বা প্রেমপত্র এখন অনুপমের মাথাব্যথার কারণ  

  • আপলোড সময় : ১৯-০২-২০২৪ ০৮:৫২:৪২ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১৯-০২-২০২৪ ০৮:৫২:৪২ অপরাহ্ন
বিশ্বের দীর্ঘতম ৩২৭ ফুট লম্বা প্রেমপত্র এখন অনুপমের মাথাব্যথার কারণ  
একসময় পারুকে না পেয়ে নিজেকে তিলে তিলে শেষ করে দিয়েছিলেন ব্যর্থ প্রেমিক দেবদাস। প্রেমে ব্যর্থ হয়ে একসময় সেই পথে হাঁটতে চেয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের আসানসোলের বাসিন্দা অনুপম ঘোষাল। কিন্তু, মারা গেলে যে ভালবাসার গল্পটা না-বলা থেকে যাবে। তাইতো প্রেয়সী পারমিতাকে উদ্দেশ্য করে লেখেন চিঠি। একটু আধটু নয় লিখতে লিখতে লিখে ফেলেন ৩৭২ ফুট লম্বা প্রেমপত্র।

প্রেমিকার উদ্দেশ্যে লেখা বিশ্বের অন্যতম দীর্ঘ প্রেমপত্র। বিয়ে বাড়ির রোল পেপারে লেখা ৩২৭ ফুটের অনুপমের সেই দীর্ঘ প্রেমপত্র কলকাতার দুটি নামজাদা প্রকাশনা সংস্থা ইতিমধ্যেই বই হিসেবে প্রকাশ করেছে। বেস্ট সেলার হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে বইটি। অনুপমের বয়স এখন ৫০ ছুঁইছুঁই। স্নায়ূবিক জটিল রোগে ভুগছেন তিনি। এখন তিনি ঘরবন্দি। এই অনুপম ঘোষাল নব্বয়ের দশকে উত্তাল প্রেমে পড়েছিলেন।

কলেজ পড়ুয়া অনুপমের বয়স যখন ১৮ বছর, তখন প্রতিবেশী এক তরুণীকে মন দিয়েছিলেন। কয়েকদিনের মধ্যে সেই তরুণীও অনুপমের অনুভূতি বুঝতে পারে। চোখের ইশারা, গোপনে কথা চলত তাদের মধ্যে। এভাবে দুজনে মিলে কাটিয়ে দেন পাঁচ পাঁচটা বছর। ততদিনে গ্র্যাজুয়েশন শেষ করে অনুপম শুরু করেছেন সাংবাদিকতা। অসাধারণ হাতের লেখা। হিন্দি বলয়ের খনি শহরে বাংলাভাষী এক যুব সাংবাদিকের উঠতি ক্যারিয়ার। আর এই এই সময়তেই আসে বিচ্ছেদ।

একে অপরের জীবন কাটানোর শপথ নিলেও প্রেয়সী পারমিতা চলে যায় অন্য আরেক জনের হাত ধরে। আর তা মেনে নিতে পারেননি অনুপম। ভেবেছিলেন, এই জীবন রাখার মানে কী। আর তাই প্রেমিকাকে চিঠি লিখেই তিনি আত্মহননের পথ বেছে নেবেন ভেবেছিলেন। শুরু হয় চিঠি লেখা। প্রেমিকার জন্যে জমাটবদ্ধ অনুভূতিগুলো বাড়িতে রাখা সস্তা রোল পেপারে লিখতে শুরু করেন অনুপম।

২০০০ সালের জানুয়ারি মাস থেকে লেখা শুরু করেন অনুপম। চিঠিটি লেখা শেষ হতে হতে কেটে যায় প্রায় চার মাস। প্রেমিকাকে ভুলতে গিয়ে ততদিনে ৩২৭ ফুট লম্বা প্রেমপত্র লিখে বিশ্বরেকর্ড করে ফেলেছেন তিনি। আশি হাজার শব্দের এই চিঠিতে কখনও এসেছে কবিতা, কখনও তৈরি হয়েছে নতুন গান। নিজের লেখা সেই চিঠি যখন তিনি পড়তে শুরু করলেন তখন তিনি দেখলেন তার কলম দিয়ে বেরিয়েছে অদ্ভুত সব শব্দ। যা সাহিত্যগুণে কোনও অংশে কম নয়।

সিদ্ধান্ত নেন আত্মহনন নয়, এই সৃষ্টির আনন্দেই তিনি বেঁচে থাকবেন। বিশ্বের দীর্ঘতম প্রেমপত্রের স্বীকৃতি চেয়ে গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছিলেন অনুপম। প্রাপ্তি স্বীকারের চিঠিও মিলেছে। কিন্তু সম্প্রতি অনুপমের জীবনে শারীরিক কষ্টের থেকেও বেশি সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে তার এই প্রেমপত্র। ২০০০ সালে লেখা এই চিঠির পাণ্ডুলিপি ধীরে ধীরে নষ্ট হতে শুরু করেছে। বাড়িতে ইঁদুরে কেটে দিচ্ছে, নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বিশ্বের দীর্ঘতম প্রেমপত্র।

অনুপম ঘোষাল জানিয়েছেন, এই সৃষ্টি তার সন্তানের মতো। এত বড় চিঠি সংরক্ষণ করার মতো ক্ষমতা তার নেই। তাই এই চিঠি সংরক্ষণ করার ব্যবস্থা করা হোক। যদি সরকার উদ্যোগী হয়ে এ চিঠি সংরক্ষণ করার ব্যবস্থা করে তাহলে তিনি কৃতজ্ঞ থাকবেন। অনুপম ঘোষালের দাবি, বাংলায় পত্র-উপন্যাস খুব একটা দেখা যায় না। হাতে গোনা কয়েকটি রয়েছে । তার এই লেখাটি একটি অন্যতম পত্র-উপন্যাস। ইতোমধ্যেই বহু পাঠক-পাঠিকা বইটি পড়ে তাকে ফোন করে প্রশংসা করেছেন।
দেশে ফিরে নিজের স্বপ্নের কথা জানালেন বিশ্বজয়ী হাফেজ আনাস

দেশে ফিরে নিজের স্বপ্নের কথা জানালেন বিশ্বজয়ী হাফেজ আনাস